প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর খামারিবান্ধব নয়:বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন-বিডিএফএ সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন।

প্রকাশিত: ১:৪৪ পূর্বাহ্ণ, জুন ২, ২০২৪

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক খামারিবান্ধব নন বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন-বিডিএফএ সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন। তিনি বলেন, ‘প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ডিজি খামারিদের কোনো সহযোগিতা করছেন না। তার কার্যক্রমে বোঝাচ্ছেন দেশের দুধ উৎপাদনে তাদের ডাক্তার ও মিল্ক প্রসেসিং কোম্পানিগুলোই সব কাজ করছে।’

শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন একথা বলেন বিডিএফএ সভাপতি।

ঘুস ছাড়া প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের (ডিএলএস) সেবা পাওয়া যায় না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘মহাপরিচালকের সঙ্গে দেখা করতে শিডিউল নিতে হয়। আমরা আমাদের সমস্যাগুলো অনেকবার ডিএলএস-কে জানিয়েছি। সেক্টর বড় হচ্ছে কিন্তু সার্ভিস কমে যাচ্ছে। এখন ডাক্তাররা ফোনেই ডিল করে। আগে এটা ছিল না। আগে ডাক্তাররা মোটরসাইকেলে আসত, তাদের ২০০-৩০০ টাকা দিলেই হতো। বর্তমানে ৫০০-১৫০০ টাকা দিতে হয়। ঘুস ছাড়া খামারিরা সেবা পাচ্ছে না।’

তিনি বলেন, আমরা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে হাজার হাজার বার নোটিশ দিয়েছি। ব্রাজিল থেকে মাংস বা গরু আমদানি করে কি আমরা সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্টে যেতে পারব? ব্রাজিল মাংস রপ্তানিতে পৃথিবীতে এক নম্বর দেশ। তারা কোন ধরনের গরু উৎপাদন করে বিশ্বের এক নম্বর হলো? আমাদেরকে ওই জাতের বীজ এনে দেন। আমরাও চাই গরুর মাংস চার শ টাকা কেজির ভেতরে আসুক। যেন প্রত্যেকেই সপ্তাহে অন্তত দু’দিন মাংস খেতে পারে।

তিনি বলেন, খামারিরা ট্রেনিং করতে চায়। কিন্তু ট্রেনিং হচ্ছে কাগজে-কলমে। গত ২-১ বছরে খামারিরা কোনো ট্রেনিংয়ের দাওয়াত পাননি। এমন অবস্থা চলতে থাকলে খামারিরা আগ্রহ হারাবে। খামারিরা যদি না থাকে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কাজ কী হবে?

সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদপুরের আদাবরের খামারি রাশিদা বেগম জানান, তার ২০টি গাভীর মধ্যে ১৫টি মারা গেছে। গরু অসুস্থ হলে ডাক্তারকে ফোন দিলে ১০ হাজার টাকা চায়। একদিন পরে খামারবাড়ি থেকে ডাক্তার গেছে।

রাশেদা বেগম বলেন, গরু যখন অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন ডাক্তারদের ফোন দিলে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা দিতে হবে বলে দাবি জানায়। বাধ্য হয়ে ৮ হাজার টাকা দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, ডাক্তারের সামনেই দুটি গাভী মারা গেছে। কী রোগ হয়েছিল তা জানতে তারা পরীক্ষার জন্য আলামত নিলেও এখনো রিপোর্ট দেয়নি। আমি এখন নিঃস্ব।

সংবাদ সম্মেলনে গুঁড়া দুধের আমদানি শুল্ক বাড়ানো ও কোরবানি ঈদের আগে চোরাইপথে গরু আনা বন্ধের দাবি জানিয়েছে বিডিএফএ। এছাড়া, ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের সহায়তা প্রদানের দাবিও জানিয়েছেন তারা।

বিডিএফের সভাপতি মো. ইমরান হোসেনের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি আলী আজম শিবলী, সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ ইমরান, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এ কে এম নাজীব উল্লাহ, আলী আজম রহমান শিবলী, অর্থ সম্পাদক জাফর আহমেদ পাটোয়ারী প্রমুখ।